রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন

চুপ করে বসে স্থায়ী কমিটির ঝগড়া শুনলেন তারেক রহমান

চুপ করে বসে স্থায়ী কমিটির ঝগড়া শুনলেন তারেক রহমান

বিএনপি এমপিদের শপথগ্রহণ, সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন এবং বগুড়া উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত স্থায়ী কমিটিতে না হওয়ায় ‘চরম’ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা। এ নিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভূমিকারও সমালোচনা করলে দুই নেতার মধ্যে ব্যাপক উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ওই সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও স্কাইপের মাধ্যমে সেখানে যুক্ত ছিলেন।

তবে দুই নেতার বাদানুবাদের ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং দ্বন্দ্বের নিরসন হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রায় দেড় মাস পর গত শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ও দলের এক প্রবীণ নেতা সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন।

শপথ গ্রহণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ফখরুলের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কীভাবে এসব সিদ্ধান্ত হয়। স্থায়ী কমিটির কেউ জানেও না। আপনি (ফখরুল) বললেন, শপথ নেওয়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত। কিন্তু নিজে শপথ নিলেন না। আবার বললেন, আগের নেওয়া সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। আপনি তো স্থায়ী কমিটিকে অপমান করেছেন।’

এক পর্যায়ে ওই নেতা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘আপনি কার ব্যাগ ক্যারি (বহন) করছেন?’ এ মন্তব্যের পর বিএনপি মহাসচিবও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। কেন এমন মন্তব্য করা হলো তা জানতে চান। ফখরুল ওই নেতাকে বলেন, ‘আপনি তো জাতীয় পার্টি করতেন। আপনি তো এরশাদের ব্যাগ ক্যারি করেছেন।’ জবাবে ওই নেতা বলেন, ‘আগে কী করেছি, সেটা মূল বিষয় নয়। এখন কী করছি, সেটা দেখার বিষয়।’

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে দুই নেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় তারেক রহমান স্কাইপে সব দেখলেও কিছু বলেননি। স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরাও তেমন কথা বলেননি। তবে তারা প্রবীণ ওই নেতার বক্তব্যের সঙ্গে একমত ছিলেন। ওই সময় বিএনপি মহাসচিব ক্ষোভে বলেই ফেললেন, এভাবে দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেন, ‘দুই নেতার মধ্যে বাদানুবাদ চলতে থাকলে স্থায়ী কমিটির এক সদস্য দুজনকে থামান। ওই নেতা সবার উদ্দেশে বলেন-আমরা শেখ হাসিনার অধীনে নির্র্বাচনে যাব না বললেও গিয়েছি। খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে যাব না বলেও গিয়েছি। ছিয়াশি সালে শেখ হাসিনা নির্বাচনে যাবে বলে ঘোষণা দেওয়ার পরও তা পরিবর্তন করেছেন। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতেই পারে। আমরা নির্বাচনে যাব না বলেও গিয়েছি। শপথও নিয়েছি।

ওই নেতা ফখরুলের উদ্দেশে বলেন-সিদ্ধান্ত আমরা পরিবর্তন করতেই পারি। কিন্তু আপনি কেন বললেন-এটি শুধু ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত। উনি যখন সিদ্ধান্ত দেন তখন তা দলীয় সিদ্ধান্তই বলতে হবে। আবার আপনি শপথ নিলেন না। তাহলে দাঁড়াল কী? ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একই বিষয়ে দুটি সিদ্ধান্ত দিল? আবার আপনি বললেন-শপথ না নেওয়ার আগের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, এটিও কেন বলতে গেলেন?’

স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, ‘দুই নেতাকে থামাতে এক নেতা যে ভূমিকা রাখলেন তাতে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং দ্বন্দ্বেরও নিরসন হয়। এর পরই দলের ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়। আসলে যা হয়েছে তা ভালোই হয়েছে। সবার মধ্যে ক্ষোভ ছিল। একজনের বক্তব্যের মাধ্যমে সবার বক্তব্য উঠে এসেছে। ক্ষোভ প্রশমিতও হয়েছে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877